গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর গলাচিপায় দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে বিয়ে করলেন আমিনুল ইসলাম (২৬) ও লিমা আক্তার (২২) নামের দম্পতি। গত (২৫ জুলাই) পটুয়াখালী বিজ্ঞ নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে দুজনের সম্মত্তিতে এ বিয়ে এ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে এ বিবাহ সম্পন্ন হয়। আমিনুল ইসলাম হচ্ছেন উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মো. দেলোয়ার মাতব্বর এর ছেলে এবং পটুয়াখালী সরকারী কলেজের ¯œাতক পাশ করেন। আর লিমা আক্তার হচ্ছেন গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের মোকছেদ মৃধার মেয়ে। লিমা আক্তার গলাচিপা সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত আছে। জানা যায় দীর্ঘদিন থেকে তাদের মাঝে মোবাইলে পরিচয় ও ভাল লাগার সৃষ্টি হয়। ভাল লাগা থেকে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। দীর্ঘ দিন পর্যন্ত তাদের এই ভালবাসাকে পূর্ণতা দেওয়ার লক্ষ্যে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বাঁধ সাধে উভয়ের পরিবার। তাই পরিবারের আপত্তি সত্বেও বাবা-মা’কে না জানিয়েই বিয়ে করলেন আমিনুল ইসলাম ও লিমা আক্তার। এ বিষয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা একে অপরকে অনেক আগে থেকেই চিনি। পরিচয়ে সূত্র ধরে আমাদের মাঝে একটা ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমরা আমাদের সম্পর্কের কথা পরিবারের সবার সাথে শেয়ার করি। কিন্তু তারা আমাদের এই বিষয়টি মেনে নিতে চায় নিই। তাই আমরা বাধ্য হয়েই কোর্ট ম্যারেজ করেছি। এছাড়া ওকে পাওয়ার জন্য আমার অন্য কোন উপায় ছিল না। ওকে হারালে আমরা কেউই বাঁচতাম না। আমাদেরও যে একটা পছন্দ অপছন্দের বিষয় আছে তা আমাদের পরিবার বুঝতে চায় না। এ বিষয়ে লিমা আক্তার বলেন, আমার বিবাহের পরিপূর্ণ বয়স হয়েছে। আমি আমিনুলকে অনেক আগে থেকেই চিনি। সে একজন ভাল মানুষ। আর তাই আমি তাকে ভালবেসেছি। আমাদের ভালবাসা বাবা-মা মেনে নিতে চায় নি। তাই আমরা দুজনেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। নিজের ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা আমার আছে। তাই আমি বাধ্য হয়ে আমিনুলকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা বিবাহ করি। আমিনুলের মত একজন ভাল মনের মানুষকে আমি হারাতে পারব না। এ বিষয়ে লিমা আক্তারের বাবা মোকছেদ মৃধা জানান, আমি শুনেছি আমার মেয়ের সাথে আমিনুলের বিবাহ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি হতাশ। ওকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। সবে মাত্র কলেজে পড়ালেখা করছে। আমার মেয়ে যদি আমিনুলকে বিয়ে করে সুখি হয় সেটা তার ব্যাপার। এ বিষয়ে আমিনুলের বাবা মো. দেলোয়ার মাতব্বর জানান, আমার ছেলে আমাদেরকে না জানিয়েই বিবাহ করেছে। লিমা নামের একটা মেয়ে ওর পছন্দ বলে আমাদেরকে জানিয়েছিল। আমি ওকে পরে বিবাহ করাতে চেয়েছিলাম। ভেবেছি একটা চাকুরী হলে আমরাই ওকে বিবাহ করাব। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি যে বিবাহ করবে তা বুঝতে পারি নি। ওরা যদি এতে সুখী হয় তাতেই আমাদের সুখ। এ বিষয়ে গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, মোকছেদ মৃধা গরিব মানুষ। কষ্ট করে তার মেয়েকে কলেজে লেখাপড়া করাচ্ছেন। শুনেছি কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিবাহ করেছে। ওদের পরিবার যদি মেনে নেয় তাহলে আমরাও খুশি। উপযুক্ত বয়স হলে ছেলে মেয়েদের পছন্দেই বিবাহ দিলে ভাল হয়। এ বিষয়ে কলাগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাইনুল সিকদার বলেন, আজকাল ছেলেমেয়েরা নিজেদের পছন্দ মতই বিবাহ করে। দেখা দেখির রীতি এখন প্রায় উঠেই যাচ্ছে। আমার ইউনিয়নের দেলোয়ার মাতব্বরের ছেলে আমিনুল তার পছন্দ মত বিবাহ করেছে শুনেছি।