লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে প্রতিবন্ধীকে ধরে এনে থানায় নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রাতে আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী অঞ্চল সদর আদালতের বিচারক মো. তারেক আজিজ এ নির্দেশ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন- সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন, শহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) জহিরুল আলম ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জুয়েল। লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজ্জামান আশরাফকে এ মামলা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) জসিম উদ্দিন বলেন, নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারন) আইনের ৫(২) ধারা এবং একই আইনের ৮(১) ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করতে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের নির্দেশনা জেলা পুলিশ সুপারকে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আদেশ প্রাপ্তির ২ কার্য দিবসের মধ্যে মামলার নম্বরসহ অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ আদেশ কপি পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজিকেও অনুলিপি দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
বাদীর আইনজীবী মোসাদ্দেক হোসেন বাবর বলেন, বাদী দেলোয়ারা বেগমের ছেলে আরিফ হোসেন প্রতিবন্ধী। তার ছেলেকে ধরে নিয়ে অভিযুক্তরা অমানবিক নির্যাতন করেছে। আদালতের বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়েছেন। এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৮ এর ২০০ ধারায় এবং নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারন) আইন, ২০১৩ এর ৪(১) অনুযায়ী অভিযোগটি লিপিবদ্ধ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয় সোমবার (৩ জুলাই) বিকেল ৪ টার দিকে বাদী দেলোয়ারার প্রতিবন্ধী ছেলে আরিফ হোসেনকে তাদের ঘর থেকে তুলে এনে অমানবিক নির্যাতন করে অভিযুক্তরা।
মামলার বাদী দেলোয়ারা বেগম লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আসলামুদ্দিন বেপারী বাড়ির মৃত আবুল খায়েরের স্ত্রী। অভিযোগে তিনি বলেন, জমি নিয়ে জনৈক খোকন প্রফেসরের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে খোকন বিভিন্ন লোক দিয়ে আমার ছেলেদেরকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছি। ৩ জুলাই বিকেলে আমার প্রতিবন্ধী ছেলে আরিফকে পুলিশের এসআই জুয়েল ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থানায় নিয়ে তার অমানবিক নির্যাতন করা হয়।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, একটি মামলা হয়েছে শুনেছি। তবে বিস্তারিত কিছুই জানি না।
পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, শুনেছি মামলা হয়েছে। তবে আদালতের আদেশের কপি এখনো হাতে পাইনি।