শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলায় পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকায় নতুন প্রধান শিক্ষক যোগদানের ঘটনায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেনা ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। ২৮ জানুয়ারী রবিবার উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের ৭নং রাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেলা ১২ টা পর্যন্ত ২’শ ১০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩য় শ্রেনীর একজন, ৪র্থ শ্রেনীর একজন ও ৫ম শ্রেনীর চারজন সহ মোট ছয় জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাকে অন্যত্র বদলী করা নাহলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১১০নং নলবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন নাহার সরকারি বিধি মোতাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করে ৭নং রাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে আসছে এমন সংবাদে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের গেট তালা লাগিয়ে দেন। আর এতে বিড়ম্বনায় পড়েন ক্লাস করতে আসা প্রধান শিক্ষক নাসরিন নাহার। পরে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিকাল ৪টার পরে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন তিনি। ২৮ জানুয়ারী রবিবার সকালে প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন নাহার বিদ্যালয়ে আসেন কিন্তু ক্ষুব্ধ অভিবাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে আসা থেকে বিরত রাখেন। যার ফলে ২’শ ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৬জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ ব্যাপারে অভিবাবক মোঃ মিলন ফরাজী, আব্বাস আলী গাজী জানান, পুর্বের বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে নাসরিন নাহার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিবাবকদের সাথে দুর্ব্যবহার সহ প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিবাবক সহ স্থানীয়দের রোষানলের স্বীকার হন তিনি। পরে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ৭ নং রাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এ ঘটনা অভিভাবকরা জানলে তাকে প্রতিহত করার জন্য শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করে দেয়। তাকে অন্যত্র বদলী না করা হলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেননা বলে অনেক অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন নাহার বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। একটি পক্ষ তার সুন্নাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ নান্না মিয়া জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ সমস্যা সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম জানান, সরকারী নিয়মানুযায়ী তিনি যোগদান করেছেন। তার বিরুদ্ধে পুর্বের বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন কিছু অনিয়মের কথা শোনা যায় তাই অভিভাবকরা একারনে ক্ষুব্ধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম শামীম জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। পূর্বের প্রতিষ্ঠানে কিছু অনিয়মের জন্য বর্তমান যোগদানকৃত প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।